বিএনপির বর্ধিত সভায় যোগ দিতে গিয়াস-সম্রাট দেশে
বিএনপির বর্ধিত সভায় যোগ দিতে গিয়াস-সম্রাট দেশে
২৬-০২-২০২৫ বিএনপির বর্ধিত সভায় যোগ দিতে গিয়াস-সম্রাট দেশে গিয়াস আহমেদ ও আব্দুল লতিফ সম্রাট দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত সভা ডেকেছে বিএনপি। দলের নেতারা জানিয়েছেন, ১৯৯০ সালের পর প্রথমবার এই সভা হচ্ছে। এতে দলের জাতীয় কাউন্সিলে যারা উপস্থিত থাকেন, তাদের প্রায় সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। বহির্বিশ্বে বিএনপির যেসব নেতা জাতীয় কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন, তাদেরও বর্ধিত সভায় যোগ দেওয়ার জন্য লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিউইয়র্ক থেকে দেশে যাচ্ছেন বিএনপির জাতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য, বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াস আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য আলহাজ আব্দুল লতিফ সম্রাট, বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থারত জিল্লুর রহমান জিল্লুও সভায় যোগ দেবেন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলের কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্য ও মতামত জানতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সভা থেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তও আসতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু মিডিয়াকে বলেন, সাধারণত দেশে বড় ধরনের পরিবর্তন, গণঅভ্যুত্থান কিংবা বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর এ ধরনের সভা ডাকা হয়। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই বৈঠকের তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। টুকু জানান, ১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মতো এই বৈঠক হচ্ছে। একে একধরনের মূল্যায়ন সভাও বলা যেতে পারে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত সভার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে যারা দলের প্রার্থী ছিলেন এবং দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েও চূড়ন্ত মনোনয়ন পাননি; অর্থাৎ প্রার্থী নন, কিন্তু মনোনয়নের জন্য ‘সেকেন্ডারি’ কাগজ পেয়েছিলেন, তারাও বর্ধিত সভায় থাকবেন। এছাড়া বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, থানা-উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবরা অংশ নেবেন বর্ধিত সভায়। বিএনপি ছাড়া ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও থাকবেন। তবে যারা এরই মধ্যে বহিষ্কৃত হয়েছেন, তারা এই বর্ধিত সভায় অংশ নিতে পারবেন না। বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। এর প্রায় আট বছর পর দলের এতো বড় একটি সাংগঠনিক আয়োজন বা পুনর্মিলন হতে যাচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, হাল সময়ে বিএনপির এটিই সবচেয়ে বড় সাংগঠনিক কার্যক্রম। এতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এর আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা করেছিল দলটি।
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে তখন গ্রেফতার আতঙ্কের মধ্যেই দলটির নির্বাহী কমিটির প্রায় ৮০ শতাংশ সদস্য উপস্থিত হয়েছিলেন। ওই সভায় নেতাদের যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকা এবং বিএনপির পতাকাতলে থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর চারদিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের মামলায় সাজা নিয়ে কারাগারে যান তিনি। খালেদা জিয়া কারাগারে থাকা অবস্থায় ওই বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরো বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে একসঙ্গে এক জায়গায় বসে এ সভাটা করার। সেই প্রত্যাশা পূরণে এবং একটি মহাআন্দোলন শেষে আমরা এই বর্ধিত সভা করতে যাচ্ছি।’ বর্ধিত সভা উপলক্ষে রুহুল কবীর রিজভীকে আহ্বায়ক করে ২৭ সদস্যের বাস্তবায়ন কমিটি এবং ছয়টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। গিয়াস আহমেদ আরো জানান, সভায় যোগদান শেষে তিনি ২ মার্চ সৌদি আরব যাবেন। ওমরা পালন শেষে তিনি ৫ মার্চ নিউইয়র্ক ফিরে আসবেন।